স্টাফ রিপোর্টার: চাকুরী না পেয়ে পাওনা টাকা চাওয়ায় যশোরের খড়কি কারবালা বামন পাড়া ফারাজি দোকানের মালিক ইরফান ফারাজিকে হত্যা করে রেলগেট এলাকার আব্দুল কাদের।
পরে তার স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দের উপর ভিত্তি করে পুলিশ চাচড়া রায় পাড়া রেল ক্রসিং সংলগ্ন টেরা বাবুর দখলি জমির ইটের নীচ থেকে হত্যাকাজে ব্যবহৃত বার্মিজ চাকু উদ্ধার করে
মঙ্গলবার (৩ই জানুয়ারি ২০২৩) দুপুরে যশোর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ও থানা পুলিশের যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটকের পর এ তথ্য বের হয়ে এসেছেন। আটকের পর তার স্বীকারোক্তিমূলক জবান বন্ধের উপর ভিত্তি করে খুন হওয়া দোকানী ইরফান কাজির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও চাকরির জন্য দেওয়া চুক্তিবদ্ধের নগদ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছেন।
ঘাতক আব্দুল কাদের যশোর রেলগেট রায়পাড়া এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে।
উল্লেখ্য গত ২২শে ডিসেম্বর ২০২২ বিকাল ৩ঃ৪৫ মিনিটে যশোর খড়কি কারবালা বামনপাড়া পড়া এলাকার ফারাজি দোকানের মালিক রফিকুল ইসলামের ছেলে ইরফান ফারাজিকে অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন দুস্কৃতকারীরা বুকে চাকু মেরে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে। রক্তাক্ত ফারাজিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে। ২৪ শে ডিসেম্বর দুপুরে নিহতের ভাই ইমরান ফরাজি বাদী হয়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম (বার), পিপিএম থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের সনাক্তের জন্য নির্দেশ দেন। এক পর্যায়ে যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের চৌকস দল ও থানা পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলের পাশের একটি মাদ্রাসার সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে আসামিদের সনাক্ত করেন। এক পর্যায়ে মঙ্গলবার সকালে যশোর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব-৬) এর সদস্যরা তৌহিদুল ইসলাম নামে একজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরে তাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলে থানা পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে যশোর রেল গেট এলাকার আব্দুল কাদেরের কথা উল্লেখ করেন। এরপর যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা ও থানা পুলিশের সদস্যরা যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে দুপুর আড়াইটার দিকে যশোর হত্যাকান্ডে মাস্টারমাইন্ডেড আব্দুল কাদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। পুলিশকে সে জানিয়েছে চাকরি দেওয়ার নাম করে সে দোকানী ইরফান গাজীর নিকট থেকে সে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা চাকরি দেয়ার কথা বলে গ্রহণ করেন। এই টাকা নিয়ে গোলযোগের কারণে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে।
যশোর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ রুপণ কুমার সরকার বলেন, গত দেড় বছর পূর্বে আঃ কাদের ভিকটিম ইরফান ফরাজির নিকট থেকে সরকারী চাকুরী দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন সময়ে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে ব্যবসায়িক লেনদেন হিসেবে স্ট্যাম্প করে দেয়। পরে চাকুরী না দিলে ভিকটিম ইরফান ফরাজি টাকা চাইলে আঃ কাদেরের সাথে কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আব্দুল কাদের ইরফান ফারাজি কে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
সেই সূত্রে ২২শে ডিসেম্বর আঃ কাদের, পাখি, তৌহিদ, শিশির, রাহুলদেরকে ৫০ হাজার টাকায় চাকু মেরে হত্যার জন্য চুক্তি করে। সে চুক্তি মোতাবেক ঘটনার দিন পাখি, তৌহিদ, শিশির ও রাহুল চাকু নিয়ে কারবালা ফরাজি স্টোর নামক দোকানে গিয়ে চিপস কেনার কথা বলে চাকু দ্বারা স্টেপ করে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে আসে। পরে ইরফান ফরাজিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষনা করে।