স্টাফ রিপোর্টার: অপরাধীরা কোন দলের হয় না।তারা দলের নাম ভাঙ্গিয়ে নানা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকে। তাই তাদের সম্পর্কে তথ্য দেওয়া কমিউনিটি পুলিশের অন্যতম দায়িত্ব। কমিউনিটি পুলিশের পাশাপাশি সমাজের সচেতন মহলের একই দায়িত্বে রয়েছে অপরাধীদের ধরিয়ে দিতে।
শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় যশোর পুলিশ লাইনে যশোর জেলা পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশিং অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার একথা বলেন।
এর আগে, যশোরের জেলা প্রশাসক তাজুল ইসলাম খান ও পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানে ‘মুজিব বর্ষে পুলিশ নীতি, জনসেবা ও সম্প্রীতি এই স্লোগানকে সামনে রেখে শুভ’ উদ্বোধন করেন।
এবারের কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০২১ এর মূল প্রতিপাদ্য হলো “মুজিব বর্ষে পুলিশ নীতি, জনসেবা ও সম্প্রীতি”।
কর্মসূচির শুরুতেই উপস্থিত সকলকে নিয়ে একটি র্যালি অনুষ্ঠিত হয় এবং পরবর্তীতে পুলিশ লাইন্সে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও গীতা পাঠ করা হয়।
এরপর অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন যশোর জেলার সম্মানিত পুলিশ সুপার ও কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটির প্রধান উপদেষ্টা প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম (বার), পিপিএম,পুলিশ সুপার শুরুতেই ফোরামের সাবেক আহবায়ক সদ্য মৃত্যুবরণকারী আলহাজ্ব আলী আকবরের স্মৃতিচারণ করে তার বক্তব্য শুরু করেন। তিনি বলেন, একসময় পুলিশ ছিলো শাসকদের নিরাপত্তা ও তাদের সম্পতি রক্ষার একমাত্র বাহক।কিন্তু যুগের পরিবর্তনে পুলিশ আজ পুরনো সংস্কৃতি থেকে বেড়িয়ে এসেছে। একই সাথে উপস্থিত সকলকে বাংলাদেশ পুলিশের মাননীয় ইন্সপেক্টর জেনারেলের দেয়া পাঁচটি নীতি সম্পর্কে অবহিত করেন। দূর্নীতি ও মাদকের সাথে আমার কোন পুলিশ সদস্য জড়িত থাকবে না, যদি কেউ জড়িত হয় তবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এব্যাপারে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না।
তিনি আরো বলেন, আমরা মাদকের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি নিয়ে সবসময় কাজ করি। একই সাথে তিনি বিট পুলিশিং সম্পর্কে সকলকে ধারণা দেন, বলেন পুলিশি সেবা একেবারে প্রত্যন্ত এলাকা গুলোতেও পৌঁছে দিতে বিটে নিয়োজিত অফিসারগণ কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন,দেশে কমিউনিটি পুলিশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো কমিউনিটির অপরাধের তথ্যচিত্র তাদের কাছেই থাকে। তারা চাইলে পুলিশকে সহযোগিতা করে প্রতিটি কমিউনিটি থেকে অপরাধ দূর করা সম্ভব। তাই সমাজ থেকে অপরাধ দূর করতে তাদের সবার আগে সচেতন হয়ে পুলিশকে তথ্য দিতে হবে। তাদেরকে মনে রাখতে হবে কোন অপরাধই কোন দলের হতে পারে না। তারা শুধুমাত্র দলের নাম ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে অপরাধ করার চেষ্টা করে। তাই অপরাধীদের চিহ্নিত করে ধরতে তাদের পুলিশকে সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে। তাহলেই সমাজ থেকে অপরাধী বিতাড়িত হবে।
তিনি উপস্থিত সকলকে আশ্বস্ত করে বলেন, জেলা পুলিশ কোনভাবেই নির্যাতন ও নিপীড়নের হাতিয়ার হবে না।
যশোর হলো ব্রিটিস বঙ্গের প্রথম জেলা। সমগ্র দেশের মধ্যে অন্যতম একটি জেলা এটি। এখানে মাদক ও অস্ত্রের সাথে যারা জড়িত থাকবে তাদের কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। সরবে-নিরবে কোন ধরনের চাঁদাবাজি এখানে হবে না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ ২০২১ ডিজিটাল দেশের মালিক। ধর্মের কোন অবমাননা সরকার বরদাস্ত করে না এখানেও হবে না। একই সাথে তিনি নিরাপদ ও বাসযোগ্য যশোর গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এবারের শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশিং সদস্য হয়েছেন জনাব জে.এম ইকবাল হোসেন, অধক্ষ্য ডাঃ আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজ যশোর ও সদস্য সচিব কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম যশোর এবং শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশিং অফিসার হয়েছেন জনাব শাহজাহান আহম্মেদ, পুলিশ পরিদর্শক(ইনটেলিজেন্স এন্ড কমিউনিটি পুলিশিং) কোতয়ালী মডেল থানা, যশোর।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য রাখেন উক্ত অনুষ্ঠানের সভাপতি জনাব জে.এম ইকবাল হোসেন, অধ্যক্ষ ডঃ আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজ, যশোর ও সদস্য সচিব কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম যশোর।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন, জনাব মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার “ক” সার্কেল, যশোর।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি পুলিশিং এর সদস্যবৃন্দ, বীব মুক্তিযোদ্ধাগণ, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সামাজিক গোষ্ঠীর সদস্যবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ সহ জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ, অফিসার ও ফোর্সবৃন্দ।
এ সময়ে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যশোর কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সহিদুল ইসলাম মিলন,জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার রেশমা শারমীন প্রমুখ।