৪৯ জনের ৪১ জনই ভুয়া!

নিউজটি শেয়ার লাইক দিন

নিজস্ব প্রতিনিধি: যশোরের কেশবপুরে গেজেটভুক্ত ৪৯ জন মুক্তিযোদ্ধার ভেতর যাচাই-বাছাইয়ে প্রাথমিকভাবে ৪১ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বলে প্রমাণিত হয়েছেন। গত ৩০ জানুয়ারি উপজেলা পরিষদের হলরুমে ওই ৪৯ জন গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার বিষয়ে যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। যাচাই-বাছাই শেষে বাছাই কমিটির সকল সদস্যের স্বাক্ষর সম্বলিত যাচাই-বাছাইয়ের প্রতিবেদন উপজেলা পরিষদের নোটিশ বোর্ড ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে প্রকাশ করা হয়েছে। ওই ৪১ জনের ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন বাছাই কমিটির সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কেশবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী রফিকুল ইসলাম।

 

বাছাই কমিটিতে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান, যশোর-৬ কেশবপুর আসনের এমপির মনোনীত প্রতিনিধি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম তৌহিদুজ্জামান। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি সদস্য সচিব ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম আরাফাত হোসেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের আগ পর্যন্ত যেসব মুক্তিযোদ্ধা গেজেটভুক্ত হয়েছেন তাদের ব্যাপারে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল জামুকার পক্ষে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে নেতিবাচক নানা তথ্য যায়। অনেক মুক্তিযোদ্ধার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় সর্বশেষ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে ৪৯ জন মুক্তিযোদ্ধাকে যাচাইয়ের আওতায় আনতে পত্র আসে কেশবপুরে। সে মোতাবেক ৪৯ জন গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার কাছে চিঠি দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়। মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের নির্দেশনা ও বাছাই বিধি অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ পরিবেশে গত ৩০ জানুয়ারি বাছাই সম্পন্ন করেছে গঠিত কমিটি।
যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম তৌহিদুজ্জামান বলেন, যাচাই-বাছাইয়ে রেজাকাটি গ্রামের মো. রশিদুল হক, মাদারডাঙ্গার পরিতোষ দত্ত, মাগুরাডাঙ্গার অলিয়ার রহমান ফকির ও আড়ুয়ার শৈলেন্দ্র নাথ রায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বলে প্রমাণ মিলেছে। এছাড়া হদের জহির উদ্দিন, কেশবপুরের মো. নূরুল ইসলাম, সাবদিয়ার জনাব আলী সরদার ও বেতীখোলার মো. চন্টা শেখের বিষয়ে কমিটির দ্বিধাবিভক্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জামুকার চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত কেশবপুরে যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, স্বাক্ষী প্রমাণ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থাপন করতে না পারা, ৩৩ প্রকার ক্যাটাগরির প্রশ্নে সদুত্তোর দিতে ব্যর্থ হওয়া ও ৩৭ জন বাছাই বোর্ডের সামনে হাজির না হওয়ায় ৪১ জন গেজেটভুক্ত ভুয়া মুক্তিযুদ্ধ বলে প্রমাণিত হয়েছেন। অনুপস্থিত ৩৭ জনের বেলায় ধরে নেয়া হচ্ছে তারা ভুয়া হওয়ায় হাজির হননি। স্বাক্ষী যোগাড় করতে পারেননি তারা। অনুপস্থিত ৩৭ জনসহ ওই ৪১ জনের ব্যাপারে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

বিষয়টি নিয়ে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কমিটির সদস্য সচিব এম এম আরাফাত হোসেনের কাছেে জানত চাইলে তিনি বলেন, কেশবপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবৎ হট্টগোল চলছিল। এক পর্যায়ে ভুয়া়া মুক্তিযোদ্ধ যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। এরপর যাচাই তালিকায় আনা ৪৯ জনের মধ্যে ১২ জন উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু বাকিরা উপস্থিত না থাকায় যাচাই বাছাই কমিটির পক্ষ থেকে তাদেরকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকিদের কেউ স্বচ্ছতার সাথে বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কমিটির সভাপতি ও সদস্যরা মিলে চূড়ান্ত্ম প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। যাচাই-বাছাইয়ের প্রতিবেদন বৃহসপতিবার সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদের নোটিশ বোর্ড ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে প্রকাশ করা হয়েছে।কিন্তু বাকিরা উপস্থিত না থাকায় যাচাই বাছাই কমিটির পক্ষ থেকে তাদেরকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকিদের কেউ স্বচ্ছতার সাথে বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। চূড়ান্ত অব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রতিবেদনটি মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রলয় পাঠানো। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *