৬শ’৭২কোটি টাকার সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ক্ষত,জনরোষ ঠেকাতে ৫ ব্রিজ উপহার

নিউজটি শেয়ার লাইক দিন

৬শ’৭২কোটি টাকার সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ক্ষত,জনরোষ ঠেকাতে ৫ ব্রিজ উপহার

তরিকুল ইসলাম মিঠু,যশোর: যশোরে ৬শ’৭২ কোটি টাকার মুল্যের মহাসড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মহাসড়ক নির্মাণে পুরাতন ইটের খোঁয়া,বালূ-পাথর আর নিন্মমানের বিটুমিন দিয়ে তৈরির কাজ শেষ হওয়ার আগেই সড়কের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া যশোর শহরের ভিতরে ২.১ কিলোমিটার রাস্তায় ৬৯ লাখ টাকা মুল্যের ডিভাইডার তৈরিতেও চলছে বড় ধরনের অনিয়ম। রাস্তার মাঝে ডিভাইডার তৈরির কাজ করা হচ্ছে কোন ধরণের বেজ তৈরি না করেই। পিচের রাস্তার উপরে গুটি কতক রড হাতুড়ী দিয়ে পিটিয়ে তার সাথে দেওয়া হচ্ছে ডালাই। এসব ডিভাইডারে যানবহনের সামান্যতম আঘাত লাগলেই ভেঙ্গে পড়ছে। তবে যশোর সড়ক জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী এস.এম. মুয়াজ্জেম হোসেনেরএ বিপুল অর্থের সড়ক নির্মাণে অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তবে এলাকার জন রোষ থেকে বাঁচতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারগুলো যশোর পৌর সভার ভিতরে রাস্তায় ৫টি ব্রিজ উপহার দিয়েছে। এ ৫ ব্রিজের নির্মাণ খরচ প্রায় কোটি টাকা। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো এ ব্রিজগুলো করে দিচ্ছে বিনা পয়সায়।
প্রথম থেকেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো নির্ধারিত সময়ে রাস্তার কাজ শুরু করতে না পারায় যশোর-খুলনা,যশোর-বেনাপোল,যশোর-মাগুরা সড়কে যান চলাচলা চরমভাবে ব্যহত হয়।এসব সড়কে যাতায়াতকারী যাত্রীরা পড়ে সীমাহীন দূর্ভোগে। পরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো নির্ধারিত সময় সীমা শেষ হওয়ার কয়েক মাস আগে তড়িঘড়ি করে যেনতেন কায়দায় কাজ শুরু করেন। কিন্তু যথা সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় বাংলাদেশ সড়কও জনপদ বিভাগ কাজের সময় বর্ধিত করেন। এর পরেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো যেনতেন কায়দায় কাজ সমাপ্ত করেন। কিন্তু মহাসড়ক নির্মাণের কাজ এখনো বুঝিয়ে দেয়নি সড়ক জনপদ কর্তৃপক্ষের কাছে। রাস্তা নির্মান কাজ শেষ হওয়ার আগেই রাস্তাগুলো আবারো নষ্ট হয়ে গেছে।

এর আগেও এসব রাস্তায় প্রতি বছর বরাদ্দ থাকলেও দায়সারা মাফিক রাস্তার কাজ সম্পন্ন করা হয়। ফলে বছর যেতে না যেতেই রাস্তা গুলো আবার সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গুলো কাজ শুরুর প্রথম থেকেই নানা অনিয়মের কারণে এলাকার মানুষের ব্যপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল। প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ পাওয়ার পর নির্ধারিত সময়ের কাজ শুরু না করতে পারায় জন দূর্ভোগ বেড়েছিল বহুগুনে। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট ঠিকদারী প্রতিষ্ঠানগুলো বেশি নষ্ট হওয়া রাস্তাবাদ দিয়ে ভাল রাস্তা গুলো আগেই খুঁড়া-খুঁড়ি শুর করেছিলেন। ফলে বেশি ভাঙ্গাচোরা রাস্তা গুলো দিয়ে ঝুকি নিয়ে যান চলাচল করছে। তাছাড়া মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক মাস আগে থেকে কাজ শুরু করায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করাও সম্ভাব হবে না বলে জানান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানও সড়ক জনপদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তরা। বিলম্ব হওয়ার কারণে হিসাবে সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা বৃষ্টিসহ নানান প্রকৃতিক দূর্যোগকে দায়ি করেছিলেন।


এসময়ে সংবাদ প্রকাশ করার পূর্বে সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদারের কাছেও সড়ক জনপদের যশোর নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মুয়াজ্জেমের কাছে নষ্ট রাস্তা ফেলে রেখে ভাল রাস্তা আগেই খুড়াখুড়ির বিষয়টি জানতে চাইলে তারা বলেছিলেন বেশি ভাঙ্গা রাস্তাগুলোর মাটি নিয়ে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। রাস্তা বেশী নষ্ট হওয়ার কারণ ও সেখানে কোন প্রক্রিয়ায় রাস্তা নির্মান করলে রাস্তা দীর্ঘস্থায়ী হবে তা জানার জন্যই ল্যাবে মাটি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তাই বেশি ভাঙ্গাচোরা রাস্তাগুলো ফেলে রাখা হয়েছে। ল্যাবের টেষ্ট আসলে সব শেষে অধিকতর নষ্ট রাস্তাগুলো নির্মান করা হবে। এক পর্যায়ে সেই অধিকতর নষ্ট রাস্তাগুলোও নির্মান কাজ শেষ হতে না হতেই আবার নষ্ট হয়ে পড়েছে।

একাধিক সুত্র থেকে জানা যায়, কাজ পাওয়া প্রকৃত ঠিকদার যশোরের স্থানীয় কিছু ঠিকাদারদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করায় কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে। মুল ঠিকদার প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি কাজ করলে রাস্তা তৈরিতে অনিয়ম কম হত। তাছাড়া যশোর থেকে মাগুরা, যশোর থেকে নড়াইল, যশোর থেকে মনিরামপুর পর্যন্ত প্রিয়েডিং মেন্টেনেন্স প্রগ্রাম (পিএমপি) বাবদ বরাদ্দের কিছু অংশ হলেও তা আবার বছর ঘুরতে না ঘুরতে আবারও প্রিয়েডিং মেন্টেনেন্সের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

সংশ্লিষ্ট সুত্র থেকে জানা যায়,২০১৭-১৮ চলতি অর্থ বছরে যশোর-অভয়নগর,যশোর-বেনাপোল সড়কে ৬শ’৬৫ কোটি ৯২ লাখ টাকার মুল্যের রাস্তা পূর্ণনির্মানের জন্য বরাদ্দা দেওয়া হয়। যশোর পালবাড়ির মোড় থেকে অভয়নগর রাজঘাট পর্যন্ত রাস্তায় ২টি প্যাকেজ প্রকল্পের আয়তায় এডিপির বরাদ্দ দেয় ৩৫৮ কোটি ১২ লাখ টাকা। এর মধ্যে দু’টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে রাস্তা নির্মাণের জন্য চুক্তি হয় ৩০৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। যশোর পালবাড়ির মোড় থেকে সদর উপজেলার ঘুনির রাস্তার মোড় পর্যন্ত ১৫৭ কোটি ৯৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা মুল্যে রাস্তাটির কাজ পায় মাহাবুব ব্রাদাস ও জয়েন্ট ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ঘুনির রাস্তার মোড় থেকে রাজঘাট পর্যন্ত ১৪৭ কোটি ৫৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকার কাজ পায় তমা কন্সট্রাকশন নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ রাস্তা নির্মাণে উর্দ্বিত আছে ৫৭ কোটি টাকা। রাস্তা তৈরির সময় সীমা বেঁধে দেয়া হয় ২০১৯ সালের মধ্যে। বেনাপোল থেকে যশোর পর্যন্ত ২টি প্যাকেজ প্রকল্পের আয়তায় এডিপির বরাদ্দ পায় ৩৭৮ কোটি টাকা। প্রকল্পের ১ এর অধিভুক্ত যশোর দড়টানা থেকে গদখালী পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার ১২৯ কোটি ১৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা মুুুুুুুুুুুুুুুুুুল্যে কাজ পায় মোজাহার এন্টারপ্রাইজ (প্রাঃ) লিমিটেড। গদখালী থেকে বেনাপোল জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৮.২ কিলোমিটার রাস্তায় ১শ’৩৭ কোটি ২৬ লাখ ১৮ হাজার টাকা চুক্তিতে কাজটি পায় তাহের ব্রাদার্স লিমিটেডও মোজাহার এন্টারপ্রাইজ (প্রাঃ) লিমিটেডের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দু’টি প্রকল্পে কাজের চুক্তি হয় ২৬৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। রাস্তা তৈরির শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৬ অক্টবারে ২০২০ সাল। এ রাস্তা নির্মানে উর্দ্বিত ছিল ৬১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। যশোর-মাগুরাও বেনাপোল বাইপাস সড়কে বরাদ্দ হয় ১৫ কোটি টাকা। একই সময়ের মধ্যে কেশবপুর-সরসকাঠি-কলারোয়া,কেশবপুর-বেতগ্রাম,পালবাড়ি-বোর্ডঅফিস-মনিহার,যশোর-ঝিনাইদহ,মদনপুর-ত্রিমোহনী সড়কে মেন্টেনেন্স বাবদ আরো ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সড়কগুলোতে মেন্টেনেন্সের কাজ করতে দেখা যায়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে।
অপার দিকে যশোর-খুলনা সড়কের ২টি প্রকল্পের পুরাতন ওয়েস্টেস স্বস্ব ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করা হয়েছে ১২ কোটি টাকা। যশোর-বেনাপোল সড়কের ২টি প্রকল্পের পুরাতন ওয়েস্টেস স্বস্ব ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করা হয়েছে ১৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

যশোর কেন্দ্রী বাস টার্মিনাল এলাকার গোলাম সরোয়ার বলেন, রাস্তা তৈরি করার মাস খানেকের মধ্যে মেডিকেল কলেজের সামনে রাস্তা দেবে গিয়ে এক ফুট গর্ত হয়ে গিয়েছে। অতি নিন্ম মানের উপাদান দিয়ে রাস্তা তৈরির ফলে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ধসে গেছে। প্রতি বছর বাংলাদেশ সরকার রাস্তা সংস্কারের জন্য বিপুল পরিমানের অর্থ ব্যায় করছে। কিন্তু কিছু দূনীতি বাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজেশে ঠিকাদারী মালিকরা দায়সারা মাফিক কাজ করে টাকা লুটেপুটে খাচ্ছে। যে কারণে রাস্তা নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই আবার সেগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে মডেল তৈরির জন্য সর্বদা চেষ্টা করছে কিন্তু কিছু দূনীতিবাজ সরকারী কর্মকর্তাও ঠিকাদার মালিকরা সরকারের সেই উদ্যোগকে পরিকল্পিতভাবে নৎসাৎ করে দিচ্ছে।

অভয়নগর প্রেমবাগ এলাকার,নজরুল ইসলাম, শেরেকুল ইসলাম,আব্দুল আজিজসহ একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, রাস্তা তৈরি করা নিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্টানগুলো যেন জনগনের সাথে তামাশা করছে। সেই আগের পুরাতন-খোঁয়ার, নিন্মমানের বালূর সাথে নতুন কিছু উপাদান দিয়ে তৈরি করেছে রাস্তা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো অস্থায়ী অফিসে কিছু নতুন পাথর রেখে দিয়েছিল। সেই নতুন উপাদানের সাথে পুরাতন রাস্তার ওয়েস্টেজ রিসাইকেলিং করে পুনরায় রাস্তায় দিয়েছে। আর নতুন পাথারগুলো আবার অন্য স্থানে নিয়ে েেগছে ঠিকাদার। যে কারণে রাস্তায় যা হওয়ার তাই হয়েছে। রাস্তার কাজ শেষ না হতেই আবার রাস্তাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।

 

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তমা তমা কন্সট্রাকশনের ম্যাজোর মোহনের কাছে রাস্তা তৈরি শেষ হতে না হতেই নষ্ট হওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, অতিরিক্ত যানবাহনও অতিরিক্ত লোডের কারণে রাস্তাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। তবে তিনি রাস্তায় নিন্মমানের বালু,ইটের খোঁয়া,পাথর,বিটুমিন ব্যবহারের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

তাহের ব্রাদাস (প্রাঃ) লিমিটেডের ম্যানেজার প্রকৌশলী ইমদাদুল হকের মুঠোফোনে বার বার সংযোগ দিয়েও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি নিয়ে মাহাবুব ব্রাদাসার প্রকল্প ম্যানেজার মাসুদুর রহমান জোয়ারদারের কাছে কাজের ধরন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,ওয়ার্ক ওয়াডারে যে ভাবে কাজের নির্দেশনা আছে আমরা সে ভাবেই কাজ করছি। পুরাতন পাথর-খোয়া দিয়ে নতুন করে রাস্তা নির্মানের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান,যদি পুরাতন খোয়া-পাথর ব্যবহার না করা হয় এত পাথর-খোঁয়া বাংলাদেশে কোথায়ও পাওয়া যাবে না। তাই সড়ক জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলীদের কাছ থেকে রাস্তার পুরাতন-পাথর খোঁয়া কিনে নিয়ে সেগুলোর সাথে কিছু নতুন পাথর-খোঁয়া দিয়ে আবার নতুন করে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। তবে,রাস্তার তৈরির মান নিয়ন্ত্রণে এতে কোন ঘাটতি হয়নি বলে বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের যশোরে পাঁচটি মহাসড়াকে বরাদ্দ পায় ৫৫ কোটি ২০ লাখ ৬১ হাজার টাকা। এসব বরাদ্দের মধ্যে ছিল ২১ কোটি ২২ লাখ ৮১ হাজার টাকা ব্যায়ে নাভারণ-ইলিশপুর সড়ক। ৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যায়ে রাজার হাট চুকনগর পর্যন্ত বিশ কিলোমিটার। ১০ কোটি ৭৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে রাজার হাট চুকনগরের বাকি ১৮ কিলোমিটার। পালবাড়ি থেকে মুড়ালী পর্যন্ত ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। কেশবপুর-থেকে সরষকাঠি, কেশবপুর-বেতগ্রাম, মদনপুর কলেজ মোড় থেকে ত্রিমোহনী বাজার পর্যন্ত সাড়ে সাতাশ কিলোমিটার সড়কে ৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল।
রাস্তা নতুন করে নির্মাণের জন্য ১২ নভেম্বর ২০১৫ সালে যশোর থেকে চুকনগর সড়কের কাজ পেয়েছিল খুলনার মাহাবুব ব্রার্দাস। কাজ শেষ হয় ২৮ মার্চ ২০১৬ সালে। ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই যশোর রাজার হাট থেকে চুকনগর কাজ পেয়ে ছিলেন সিলেটের মের্সাস জামিল ইকবল। কাজ শেষ সমাপ্ত করেন ২০১৫ সালের ৩১ নভেম্বর। ২০১৬ সালের ৭ মার্চ পালবাড়ি-দড়াটানা-মনিহার-মুড়ালী সড়কের কাজ পেয়েছিলেন যশোরের মঈনউদ্দিন বাঁশি। কাজটি শেষ করেন ২০১৬ সালের ৪ জুলায়। কিন্তু সেই রাস্তায় গত এক বছর নষ্ট হয়ে যান চলাচলের অনুাপযোগী হয়ে গেছে। গত বছরেই সেই ভাঙ্গা রাস্তার উপর ইটের সোলিং দিয়ে ঝুকি নিয়ে ভারী যানবহন চলাচল করছে। ২০১৫ সালের ২৫ নভেম্বর কেশবপুর-সরষকাঠি, কেশবপুর-বেতগ্রাম, মদনপুর কলেজ মোড়-ত্রিমোহনী বাজার পর্যন্ত কাজ পেয়েছিলেন বাগেরহাটের মের্সাস মোজাহার এন্টারপ্রাইজ। কাজ শেষ করেন ২০১৬ সালের ২২ আগস্ট। সে রাস্তাও ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে।

মহাসড়ক নির্মানের নানা অনিয়মের বিষয়ে যশোর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এস.এম. মুয়াজ্জেম হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তায় যে সমস্ত ট্রাক বা লরী চলে তার অধিকাংশ অভার লোড নিয়ে রাস্তা চলে। যে কারণে এসব রাস্তা দ্রুত্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে বার বার পুলিশকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি।তবে স্থানীয় ইটের ভাটার আমা ইট, বা ওয়েস্টেট ইট , নিন্মমানের বালু,পাথর,বিটুমিন দিয়ে রাস্তা তৈরির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তা তৈরির ওয়ার্ক ওয়ার্ডারেই বলা আছে রাস্তার পুরাতন ওয়েস্টেস দিয়ে রাস্তা তৈরি করতে পারবে? পুরাতন ওয়েস্টেসের সব মালামালই তো আর নষ্ট হয়ে যায় না। ওয়েস্টেসের কিছু মালামাল ভাল থাকে? সেগুলোর সাথে নতুন করে মালমাল সংযুক্ত করে নতুন করে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। প্রকল্পের অবশিষ্ট ৭৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা কোন পন্থায় ব্যায় করা হবে জানতে চাইলে তিনি জানান,বিদুৎ বিল,রাজস্ব ব্যায় ও বিবিধ ব্যায় বাবদ এসব টাকা ব্যয় করা হবে। রাস্তার পুরাতন ওয়েস্টেস বিক্রির ৩০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা সরকারী ফান্ডে জমা থাকবে। তাছাড়া ঠিকাদাররা যথেষ্ট আন্তরিক। আমারও যশোর পৌর মেয়রের অনুরোধে বিনামূল্যে তারা প্রায় কোটি টাকা মূল্যের পাঁচটি ব্রিজ নির্মাণ করে দিচ্ছে বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *