সমবায় কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর ৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ

নিউজটি শেয়ার লাইক দিন

বিশেষ প্রতিনিধি: রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ফ্ল্যাট, ফরিদপুরে জমি। শেয়ারবাজারে কোটি টাকা বিনিয়োগ। আর ব্যাংকে তো এফডিআর ও সঞ্চয়সহ রয়েছে কয়েক কোটি টাকা।

প্রাথমিকভাবে সমবায় অধিদপ্তরের উপ-নিবন্ধক মুহাম্মাদ গালীব খানের এতো পরিমাণ সম্পদের খোঁজ মিললেও তার স্ত্রী তানিয়া সুলতানা রাখি যেন আরও এগিয়ে।

তার নামে রয়েছে ঢাকার খিলগাঁওয়ে জমি। বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রকল্পে প্লট। ধানমন্ডিতে ফ্ল্যাট। ফরিদপুরের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ২৫৪ শতাংশ জমি। গাড়ি-বাড়ির পাশাপাশি ব্যাংকে কয়েক কোটি টাকা। শেয়ারে তো বিনিয়োগ রয়েছেই।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বলছে, প্রাথমিকভাবে তানিয়া সুলতানা রাখির সাত কোটি ২৫ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এরমধ্যে দুই কোটি ৮৩ লাখ ২৫ হাজার ৫২০ টাকার সম্পদই অবৈধ।

অন্যদিকে রাখির স্বামী গালীব খানের স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে প্রাথমিকভাবে মোট দুই কোটি ৭৬ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। এরমধ্যে তার বিরুদ্ধে দুই কোটি ১৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ এনেছে দুদক। অর্থাৎ গালীব খানের সম্পদের বেশিরভাগই ‘অবৈধ’।

সেই হিসাবে এই দম্পতির চার কোটি ৯৭ লাখ ২৪ হাজার ৭৩৩ টাকার অবৈধ সম্পদ পেয়েছে দুদক।

এরই মধ্যে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। বুধবার (১২ অক্টোবর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ মামলা দুটি করেন। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

তানিয়া সুলতানা রাখির বক্তব্য এবং রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দুদক জানতে পারে যে, রাখির নিজ নামে ফরিদপুরের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ২৫৪ শতাংশ জমি, খিলগাঁওয়ে ৩ দশমিক ৫০ কাঠা জমি, বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রকল্পে সাড়ে তিন কাঠার প্লট এবং ধানমন্ডির ৭ নম্বরে অ্যালায়েন্স প্রপার্টিজ লিমিটেড থেকে কেনা একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। সব মিলিয়ে দালিলিক হিসাবে এক কোটি ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।

অন্যদিকে রাখির নামে বিভিন্ন সময়ে চালু করা এফডিআর, পারিবারিক সঞ্চয়পত্র, শেয়ারে বিনিয়োগ, নিজ নামে বিভিন্ন ব্যাংকে চালু করা সেভিংস ও চলতি অ্যাকাউন্টে টাকা জমা, গাড়ি কেনাসহ মোট ছয় কোটি ২৪ লাখ ১২ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে সাত কোটি ২৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য পায় দুদক। এরমধ্যে চার কোটি ৪২ লাখ ৬৮ হাজার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বৈধ উৎস পাওয়া গেলেও বাকি দুই কোটি ৮৩ লাখ ২৫ হাজার ৫২০ টাকার সম্পদের স্বপক্ষে কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।

অপরদিকে তার স্বামী গালীব খানের বিরুদ্ধে করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গালীব খানের নিজ নামে খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়ায় ১৪১৬ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ও ফরিদপুরে দুই যায়গায় ৬২ শতাংশ জমিসহ ৩৪ লাখ ৬৩ হাজার ৮০০ টাকায় স্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।

এছাড়া তার নামে এফডিআর ও সঞ্চয় হিসাবসহ মোট দুই কোটি ৪১ লাখ ৮৮ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য মেলে। স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে মোট দুই কোটি ৭৬ লাখ ৫২ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য পায় দুদক।

অনুসন্ধানকালে গালীব খানের শেয়ারে বিনিয়োগ পাওয়া যায় এক কোটি ২৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। ওই টাকাসহ দুই কোটি ১৩ লাখ ৯৯ হাজার টাকা সম্পদের বৈধ কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। তবে আর কোন সম্পদ আছে কিনা সে বিষয়েও দুদকের কর্মকর্তারা অনুসন্ধানে করে যাচ্ছেন বলে জানান দুদক কর্মকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *