বিশেষ প্রতিনিধি: এবারের সমাপনী পরীক্ষায় মুখে দিয়ে লিখেই সমাপনী পরীক্ষা দিচ্ছে লিতুন জিরা। দুই হাত-পা ছাড়াই জন্ম নেয়া লিতুন জিরা। তাই বলে কি লেখা পড়া বন্ধ থাকবে। হাত পায়ের কাছে কি সে পরাজিত হবে। না তা হতে পারে না। সব প্রতিবন্ধকতা মনের জোরে দুরে সরিয়ে দিয়ে মুখে ভর দিয়ে লিখেই এবার প্রাথমিক শিা সমাপনী (পিইসি) পরীা দিচ্ছে এ শিক্ষার্থী। লিতুন জিরা যশোরের মণিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে। সে উপজেলার খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিইসি পরীায় অংশ নিয়েছে।
লিতুন জিরা পরনির্ভর হয়ে সমাজের বোঝা হতে চায় না। লেখাপড়া শিখে মানুষের মত মানুষ হয়ে আরও দশজন মানুষের মতো আত্মনির্ভশীল হতে চায়। মুখে ভর দিয়ে লিখেই মেধার স্বার রাখছে এই শিার্থী।
স্থানীয়রা জানান, লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহী লিতুন জিরা প্রখর মেধাবী। হুইল চেয়ারে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতো। বর্তমানে হুইল চেয়ারটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তা চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে গেছে। তার বাবা উপজেলার এ আর মহিলা কলেজের প্রভাষক। তিনি গত ১৭ বছর ধরে ওই কলেজে চাকরি করলেও আজও কলেজটি এমপিওভুক্তি হয়নি। তার বাবাই সংসারের একমাত্র উপার্জনম ব্যক্তি। বেতন না হওয়ায় নতুন হুইল চেয়ার কেনার জন্য বাবাকে বলতে পারছে না লিতুন জিরা। বছর সাতেক আগে উপজেলা প্রশাসনের প থেকে হুইল চেয়ারটি দেয়া হয়। বর্তমানে তার একটি হুইল চেয়ার খুব দরকার।
লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান ও মা জাহানারা বেগম বলেন, জন্মের পর মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে তারা নানা চিন্তা করতেন। এখন মেয়ের মেধা তাদের আশার সঞ্চার করেছে। লিতুন জিরা আর দশ জন শিশুর মতো খাওয়া-দাওয়া, গোসল সব কিছুই করতে পারে। মুখ দিয়েই লিখে সে। তার চমৎকার হাতের লেখা যে কারও দৃষ্টি কাড়বে।
খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক সাজেদা খাতুন বলেন, শিকতা জীবনে লিতুন জিরার মতো মেধাবী শিার্থীর দেখা পাইনি। এক কথায় সে অসম্ভব মেধাবী। শুধু লেখাপড়ায় না, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অন্যদের থেকে অনেক ভালো।