নিজস্ব প্রতিনিধি:বিবাহিত, অনুপ্রবেশকারী, মাদকসেবীসহ বিভিন্ন অভিযোগের মুখে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ৩২ নেতা পদ হারিয়েছেন।এদের মধ্যে ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আর ১১ জনের আবেদনে প্রেক্ষতি অব্যাহতি দিয়েছে পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের পাঠানো দুটি পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই নেতাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
এ বিষয়ে লেখক ভট্টাচার্য বলেন, “পদ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ছিল। তদন্তের মাধ্যমে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাদের অব্যাহতি প্রদানপূর্বক পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া কয়েকজন স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিয়েছেন। পরবর্তীতে এই শূন্য পদগুলো যোগ্যতার ভিত্তিতে পূরণ করা হবে।”
দোষী সাব্যস্ত হয়ে অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তানজিল ভূঁইয়া তানভীর, আরেফিন সিদ্দিক সুজন, আতিকুর রহমান খান, বরকত হোসেন হাওলাদার, শাহরিয়ার কবির বিদ্যুৎ, সাদিক খান, সোহানী হাসান তিথী, মুনমুন নাহার বৈশাখ, আবু সাঈদ (সাস্ট), রুহুল আমিন, রাকিব উদ্দিন, সোহেল রানা ও ইসমাইল হোসেন তপু, দপ্তর সম্পাদক আহসান হাবীব, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক তাজ উদ্দীন, উপ-দপ্তর সম্পাদক মমিন শাহরিয়ার ও মাহমুদ আব্দুল্লাহ বিন মুন্সী, উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক বি এম লিপি আক্তার ও আফরিন লাবনী, সহ-সম্পাদক সামিয়া সরকার ও রনি চৌধুরী।
আর আবেদনের প্রেক্ষিতে স্বেচ্ছায় অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন- সহসভাপতি এস এম তৌফিকুল হাসান সাগর, আমিনুল ইসলাম বুলবুল, বি এম শাহরিয়ার হাসান, হাফিজুর রহমান ও এস এম হাসান আতিক, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক শাহারিয়ার ফেরদৌস, উপ-স্বাস্থ্য সম্পাদক রাতুল সিকদার ও শাফিউল সজীব, উপ-প্রচার সম্পাদক সিজাদ আরেফিন শাওন, উপ পাঠাগার সম্পাদক রুশী চৌধুরী ও সহ-সম্পাদক আঞ্জুমানারা অনু।
গত বছর ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের আড়াই মাস পর ৩১ জুলাই রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক করে সংগঠনের আংশিক কমিটি ঘোষিত হয়। এর প্রায় এক বছর পর গত ১৩ মে ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটি ঘোষণার দিন থেকেই কমিটি পুনর্গঠনের দাবি তোলেন পদবঞ্চিত ও কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়া ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
ওই সময় বিক্ষুব্ধরা ছাত্রলীগের নতুন পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাওয়া ৯৭ জনকে ‘বিতর্কিত’ দাবি করে তাদের একটি তালিকাও প্রকাশ করেন।
তাদের অভিযোগ ছিল, এই তালিকার কেউ বিবাহিত, কেউ অনুপ্রবেশকারী, কেউ মাদকসেবী, কেউ মামলার আসামি, কারও বয়স পেরিয়ে গেছে, কেউ চাকরিজীবী, কেউ ছাত্রদল কিংবা শিবির থেকে আসা।
অভিযোগের মুখে থাকা নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিক্ষুব্ধদের অন্যতম নেতা ছাত্রলীগের সাবেক কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন বলেন, “ছাত্রলীগের এই সিদ্ধান্তকে আমরা ইতিবাচক হিসেবে দেখছি। তবে আমাদের দাবির পূর্ণতা সেই সময় পাবে যখন এই সব শূন্য পদগুলো যোগ্যতার ভিত্তিতে পদায়ন করা হবে।”
তিনি বলেন, “ছাত্রলীগের এই প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রমাণ হল, আমরা ভুল ছিলাম না। বরং সেই সময় আমাদের আন্দোলন নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলেছিল তারাই ভুল ছিল।”