কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার মামলায় ওসি মিজানের যাবজ্জীবন

নিউজটি শেয়ার লাইক দিন

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :চট্টগ্রাম মহানগরীতে এক কলেজছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানায় ওসি (তদন্ত) হিসেবে কমর্রত মিজানুর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল—৭—এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় মিজানুর রহমানকে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে সাজামূলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খন্দকার আরিফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, কলেজছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও দুই লাখ টাকা অর্থদন্ড দিয়েছেন আদালত। ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় একই আইনের ৯ (৪)—খ ধারায় ১০ বছর কারাদন্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ড দিয়েছেন।

আদালত রায়ে বলেছেন, উভয় ধারায় দেয়া সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে। এছাড়া গ্রেফতারের পর থেকে তার হাজতবাসের মেয়াদ সাজার মেয়াদ থেকে বাদ যাবে। দন্ডিত মিজানুর রহমান ঘটনার সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে কমর্রত ছিলেন। ওসি মিজান হিসেবে পরিচিত এই কর্মকর্তাকে অভিযোগ ওঠার পর বরখাস্ত করা হয়েছিল। এর আগে তিনি চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ থানায় উপ—পরিদর্শক (এসআই) হিসেবে কমর্রত ছিলেন বলে জানান পিপি খন্দকার আরিফুল আলম।

আদালত সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ১২ জুলাই নগরীর ফয়সলেক এলাকা থেকে ই¯পাহানি স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্রী ও তার বন্ধুকে তুলে নিয়ে যান মিজানুর রহমান। মেয়েটিকে নগরীর চকবাজারে একটি হোটেলে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তিনি। এ ঘটনায় ওই বছরের ১৬ জুলাই মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় মিজানুর রহমানসহ তিনজনকে আসামি করে দুদটি মামলা দায়ের করেন। বাকি দুই আসামি ওই হোটেলের কর্মচারী।

ঘটনার পর প্রায় সাড়ে তিনমাস পলাতক থাকা মিজানুর রহমান ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে আত্নসমর্পণ করেন। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠান। হাইকোটের্র আদেশে ২০১২ সালের জুলাই মাসে তিনি জামিনে মুক্তি পান।

ধর্ষণের চেষ্টার মামলায় অভিযোগপত্র দাখিলের পর ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৯ (৪)—খ এবং দন্ডবিধির ৪২০, ১৭০ ও ৩৮৬ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং যুক্তিতর্ক শেষে চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল মামলার বিচারিক কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করেন আদালত।

এদিকে মামলায় তিনজনকে আসামি করা হলেও দু‘জনের বিচার কার্যক্রম হাইকোটের্র আদেশে স্থগিত আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *