নিজস্ব প্রতিবেদক: শুরুটা আশির দশকে। একজন যুবক তার পৈতৃক ফসলের ক্ষেতে কাজ করছে। এমন সময় আরেকজন লোক রজনীগন্ধা ফুল হাতে করে নিয়ে যাচ্ছে।
যুবকটি কৌতুহলী হয়ে ঐ ব্যক্তির কাছে ফুল এবং ফুলের চাষ সম্পর্কে জেনে নিয়ে ভারতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য থেকে বীজ নিয়ে এসে সর্ব প্রথমে যশোরের গদখালীর পানিসারা মাঠে এক বিঘা জমিতে রজনীগন্ধার চাষ শুরু করেন। সেই ফুল চাষের সূতিকাগার নামে খ্যাত ঝিকরগাছার গদখালী পানিসারা গ্রাম। লক্ষ কোটি ফুলপ্রেমীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে সেই মাঠের হাজারো রকমের ফুল। বাংলাদেশের ৭০% ফুল উৎপাদন হয় সেই পানিসারাতে। বাংলাদেশের ফুলের রাজধানীও বলা হয় সেই পানিসারা।
সেদিনের সেই যুবক শের আলী সরদার জীবনাবাসন হলো পঁচাত্তরে এসে। যার হাত ধরে শুধু যে ঝিকরগাছার গদখালীতে তা নয় ফুলের বিপ্লব ঘটেছে সারা বাংলাদেশে।
এই ফুল প্রেমি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা ইউনিয়নের পানিসারা গ্রামের মৃত রহমান সরদারের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫০ সালে। তিনি পানিসারা ইউনিয়নের কুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তারপর পিতার পেশা চাষাবাদের কাজ শুরু করেন। ফুল চাষের জন্য তিনি পৃথিবীর ১৭ টা দেশ ভ্রমণ করে নিজেকে সমৃদ্ধ করেছেন। সেই অভিজ্ঞতা দেশে কাজে লাগিয়ে গদখালির ফুল সেক্টরকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন।
দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে শের আলী সরদার বাড়িতেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারী) ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে ৭৫ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
তার দুই স্ত্রী, চার পুত্র, তিন কন্যা সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গিয়েছেন।
মরহুম শের আলী সরদারের ১ম জানাজার নামাজ যোহরের নামাজর পর পানিসারায় তার নিজ বাড়িতে এবং ২য় জানাজার নামাজ আসরের নামাজের পর পানিসারা ফুল মোড়ে অনুষ্ঠিত হবে। তার মৃত্যুতে এ অঞ্চলের মানুষ একজন উদ্ভাবক হারিয়েছেন।