নিজ চালককে জেলা প্রশাসক নিজেই গাড়ি চালিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দিলেন
স্টাফ রিপোর্টার: নিজ দপ্তরের সরকারি গাড়ি চালক হাবিবুর রহমান কে জেলা প্রশাসক মো: আজাহারুল ইসলাম নিজেই গাড়ি চালিয়ে পৌঁছে দিলো বাড়িতে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর ২০২৪) সন্ধ্যায় চার দশক ধরে যশোর জেলা প্রশাসকের ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি চালানো হাবিবুর রহমানকে বাড়িতে পৌঁছে দেন তিনি।
হাবিবুর রহমান ১৯৮৫ সাল থেকে যশোর জেলা প্রশাসনের গাড়ি চালিয়ে আসছিলাম। অবসরে যাওয়ার একদিন আগেই যশোর জেলা প্রশাসক তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় কালে নিজেই সেই গাড়ি চালিয়ে তাকে নিজ বাড়িতে পৌঁছে দিলেন।
প্রায় চার দশক ধরে যশোর জেলার জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি চালানোর সুবাদে তিনি অত্র জেলার নানা রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক ঘটনাবলীরও সাক্ষী হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত। ২০২২ সালে জেলা পর্যায়ে শুদ্ধাচার পুরস্কারে ভূষিত হন গাড়ি চালক হাবিবুর রহমান। দীর্ঘ চাকুরিজীবনে নিজেকে সততা ও কর্মনিষ্ঠার মূর্ত প্রতীক হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

বিদায় সংবর্ধনায় দেয়া বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম বলেন, গাড়ি চালক হাবিবুর রহমান”সততা ও নৈতিক আচরণের প্রশ্নে আপোষহীন ছিলেন। তিনি সত্যিই বিরল। এ সময়ে তিনি জেলা প্রশাসক দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে ব্যক্তি ও চাকুরীজীবনে গাড়ি চালক হাবিবুর রহমানের আদর্শ ধারণ ও বাহন করার পরামর্শ দেন।
গাড়ি চালক হাবিবুর রহমান আবেগে আপ্লুত হয়ে বলেন, আজ জেলা প্রশাসকের মহানুভবতা আমাকে মনে করিয়ে দেয় বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামের সেই কালজয়ী ওমর ফারুক কবিতার দুটি লাইন, ইসলাম বলে সকলে সমান, কে বড়ো ক্ষুদ্র কেবা!
ভৃত্য চড়িলো উটের পৃষ্ঠে ওমর ধরিলো রশি, মানুষের স্বর্গে তুলিয়া ধরিয়া ধুলায় নামিল শশী!
সত্যি ইসলামের খলিফা হযরত ওমর (রা:) যেমন মরুভূমি পাড়ি দেয়ার সময়ে তিনি উটের পিঠ থেকে নিচে নেমে এসে তার ভৃত্যকে যেমন উটে উপর জড়িয়ে নিজেই রশি ধরে নিয়ে গিয়েছিলেন। আজকে যশোরের জেলা প্রশাসক একই রকম দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। জেলা প্রশাসক স্যার তার গাড়ি চালিয়ে আমাকে নিজ বাড়িতে পৌঁছে দিলেন। সত্যিই জেলা প্রশাসকের এই মহানুভবতায় আজ আমি মুগ্ধ।